বর্তমানে দেশজুড়ে ডেঙ্গু মশার কামড়ে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশের যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে সেসব এলাকায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৬ জুন) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়। চিঠিতে সই করেছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সাইফুল ইসলাম মজুমদার।
চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন সব সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় বিশেষ করে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, বরিশাল, বরগুনাসহ যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে—সেখানে মশক নিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকরণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ জরুরি। এছাড়া, এ বিভাগের অধীন তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলোর মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক বার্তা প্রচার-প্রচারণাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা অপরিহার্য। এসব বিভাগের আওতাধীন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে শূন্য পদে দ্রুত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা প্রয়োজন।
এমন অবস্থায় ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
ডেঙ্গু মশাসহ বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণ-ক্ষতি থেকে বাঁচার দোয়া
উল্লেখ্য, চলতি বছরে জুনের ১৬ দিনে ১ হাজার ৮৭৭ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে; যা পুরো মে মাসের চেয়েও বেশি। এছাড়া এই মাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৭ জন।
বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষতিকর বিষাক্ত পোকা-মাকড় ও প্রাণী থেকে মুক্ত থাকতে সাহাবায়ে কেরামকে শিখিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া। এ দোয়ার নিয়মিত আমলে যেকোনো বিষাক্ত পোকা-মাকড় ও প্রাণীর আক্রমণ এবং ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকবে মানুষ।
হাদিসে এসেছে- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একবার এক লোককে বিচ্ছু (বিষাক্ত প্রাণী) দংশন করার কারণে লোকটি ব্যথার কারণে রাতে ঘুমাতে পারল না। সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিষয়টি জানালে তিনি বললেন, যদি সন্ধ্যা বেলায় এ দোয়াটি পড়তে তাহলে সকাল পর্যন্ত বিচ্ছুর (বিষাক্ত প্রাণীর) দংশন তাকে কোনো ক্ষতি করতে পারতো না’। (মুসলিম, ইবনু মাজাহ, আবু দাউদ)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেখানো দোয়াটি হলো, أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ: ‘আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিং শাররি মা খালাক্বা’।
অর্থ: ‘আমি আল্লাহর সব পূর্ণ কালেমাসমূহের উসিলায়, তার সৃষ্ট সব (বিষাক্ত) প্রাণীর অনিষ্টতা থেকে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।
উক্ত দোয়ার ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যা বেলায় উক্ত দোয়াটি ৩ বার পড়বে, ওই রাতে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর বিষ তাকে কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
হজরত সুহাইল ইবনে আবি সালেহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাদের পরিবারের সবাই এ দোয়াটি মুখস্ত করে নিয়েছিল এবং নিয়মিত তা পড়তো, একদিন আমাদের পরিবারের একটি মেয়েকে বিচ্ছু দংশন করলো কিন্তু সে কোনো ব্যথাই অনুভব করেনি। (মুসনাদে আহমদ)
হজরত খাউলা বিনতে হাকিম সুলামি রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি কোনো এলাকায় অবতরণ করার পর উক্ত দোয়াটি পড়বে ওই এলাকা থেকে না যাওয়া পর্যন্ত তাকে কোনো কিছু (কোনো হিংস্র প্রাণী কিংবা মানুষ শত্রু) কোনো ধরণের ক্ষতি করতে পারবে না।’ (মুসলিম, তিরমিজি)
ইয়া আল্লাহ! মুসলিম উম্মাহকে ডেঙ্গু মশাসহ বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণ ও ক্ষতি থেকে আপনার প্রিয় হাবিব রাসূলুল্লাহ (সা.) এর শেখানো দোয়ার আমলের মাধ্যমে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।