জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জাতীয় সনদের খসড়া প্রস্তুত করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শুরুতে তিনি এ কথা জানান।
আলী রীয়াজ বলেন, আমরা জানি, সব বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হবে না। তবে আলোচনার মাধ্যমে অন্তত কিছু বিষয়ে একমত হওয়াই আমাদের লক্ষ্য। জাতি ও রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে ছাড় দেওয়ার মনোভাব নিয়ে এগোতে হবে।
ঈদের আগে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রাথমিক আলোচনা শুরু হলেও মূল আলোচনা শুরু হয়েছে আজ। এ ছাড়া আজ বাদে ১৮ এবং ১৯ জুন টানা তিনদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও আলোচনা অব্যাহত রাখা হবে।
আজকের আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
বৈঠকে আলোচ্য বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে— সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ। সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর প্রস্তাব। স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন প্রক্রিয়া। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের ধারণা। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংস্কার।
আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এই আলোচনাগুলোর মাধ্যমে আমরা একটি কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব। রাজনৈতিক দলগুলোর ইতিবাচক অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
তিনি আরো বলেন, সমস্ত বিষয়ে একমত হওয়া হয়তো সম্ভব হবে না, তবে কিছু বিষয়ে একমত হলেই তা হবে জাতির জন্য বড় অর্জন। এই প্রক্রিয়া যদি অব্যাহত থাকে, আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।
আজকের বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আশা করছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা থাকলে জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করা যাবে, যা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হয়ে উঠবে।