টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ‘নাস্তিক’ লেখকদের বই রাখায় একটি পাঠাগার থেকে প্রায় ৪০০ বই ‘লুট’ করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খেলাফত মজলিসের এক নেতার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাতে জেলার বাঁশহাটি এলাকায় ‘অভয়ারণ্য পাঠাগারে’ এই লুটপাট চালানো হয়। এর আগে খেলাফত মজলিসের ওই নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ঘোষণা দেন।
বই লুটপাটের ঘটনায় শুক্রবার প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে পাঠাগার কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে ধনবাড়ী থানার ওসি এস এম শহিদুল্লাহ বলেন, হুজুররা পাঠাগারে থাকা হুমায়ুন আহম্মেদ, জাফর ইকবালের বই নিয়ে ইউএনও অফিসে রেখেছে। তাদের দাবি, ওই লেখকরা নাস্তিক। নাস্তিকদের বই রাখা হয়েছে সেখানে। কতগুলো বই নিয়েছে সেটা জানি না। রোববার (২৭ এপ্রিল) ইউএনও কার্যালয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলেও জানান ওসি।
২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ২০২২ সালে একবার এই পাঠাগারটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল।
পাঠাগার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ যুব খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী ওরফে রিশাদ আমীন ‘অভয়ারণ্য পাঠাগার’ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন।
সেখানে তিনি লেখেন, ‘ধনবাড়ীতে নাস্তিক্যবাদের কোন জায়গা হবে না। এটাই ফাইনাল বক্তব্য আমাদের। নাস্তিক বানানোর এক কারখানার সন্ধান পেয়েছি আমরা। অতিদ্রুত আপনাদের কারখানায় তালা লাগিয়ে ধনবাড়ী ছাড়ুন। অনেকদিন অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করে ভণ্ডামি করেছেন আপনারা। আর এই সুযোগ পাচ্ছেন না। কথা ক্লিয়ার।’
অভয়ারণ্য পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে ২০-২৫ জন হুজুর পাঠাগারে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। এ সময় তারা ভিতরে ঢুকেই বলে, ‘ওই, সব বই ব্যাগে তুল। এঁনে কোনো বই থাকব না। জাফর ইকবাল নাস্তিক, জাফর ইকবালের সব বই নে। এখান থেকে মানুষ নাস্তিকের বই পড়ে।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহীন মাহমুদ বলেন, কিছু লোকজন রাতে পাঠাগার থেকে বই নিয়েছে এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। বইগুলো তারা ইউএনও কার্যালয়ে রেখে গেছে এটা জেনেছি। তবে সেখানে কী পরিমাণ বই রয়েছে সেটা জানি না। দুইপক্ষকেই আসতে বলা হয়েছিল। একপক্ষ আসলেও আরেকপক্ষ উপস্থিত ছিল না। পরে উভয়পক্ষকে রোববার কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে।