আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আসন্ন ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয়দফা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা পেয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে গুঞ্জন শোনান যাচ্ছে।
এই আলোচনা সফল হলে পাশ্চাত্যবিরোধী জোটের প্রভাব কিছুটা কমবে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। রাশিয়া, ইরান, চীন ও উত্তর কোরিয়ার অনানুষ্ঠানিক কূটনৈতিক জোট থেকে উত্তর কোরিয়াই সরে আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
এ পরিস্থিতিতে কিমের রাজনৈতিক অবস্থানের ভাবধারা বুঝতে পারছেন না বিশ্লেষকরা।
প্রথম দফার ক্ষমতায় কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের তুলনামূলক সহাবস্থান ভবিষ্যতে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির বার্তাই দিচ্ছে।
এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে কোরিয়া উপদ্বীপে সামরিক উপস্থিতি কমিয়ে চীনকে মোকাবিলায় বেশি মন দিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটনের মিত্ররাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান এই ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গ দেওয়ার বিষয়টি অনুমেয়।
এদিকে উত্তর কোরিয়া অতীতে চীন ও রাশিয়াকে সমর্থন করলেও কিমের ওপর পুরোপুরি ভরসা রাখতে পারছে না দুদেশের প্রশাসন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কিমের যোগসংযোগ প্রায় পুরোটাই বিনিময়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সামরিক সহায়তার বিনিময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে খাদ্যশস্য, তেল ও সামরিক প্রযুক্তি নিচ্ছে পিয়ংইয়ং প্রশাসন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট বাঁধার মাধ্যমে বেশি আর্থিক লাভের পথ খোলা আছে কিমের সামনে।
এ ছাড়া অতীতেও চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। এদিকে সম্প্রতি বেশ কয়েকবার পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ২০১৯ সালের পর দেখা করেননি কিম।
তবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেইজিং-নির্ভরতা থাকায় চীনবিরোধী পদক্ষেপ নিলে বিপাকে পড়ার সম্ভাবনাও আছেও উত্তর কোরিয়ার।
ট্রাম্প-কিমের অতীত আলোচনাগুলো সফলতার মুখ না দেখার কারণ উত্তর কোরিয়ার কাছে পূর্ণ পারমাণবিক নিস্ক্রিয়করণ দাবি করা।
তাই, এবার ট্রাম্পকে ভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, আপাতত উত্তর কোরিয়ার কাছে পারমাণবিক গবেষণা কমানোর প্রস্তাবের চেয়ে বেশি কিছু দাবি করা বাস্তবসম্মত নয়।
এই প্রস্তাবে সম্মতির বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে নির্দিষ্ট কিছু খাতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পক্ষপাতী তারা।
ট্রাম্প শাসনের দ্বিতীয় সংস্করণ নিয়ে অনেক আলোচনাই হচ্ছে ওয়াশিংটন পাড়ায়। নতুন বছরে ট্রাম্প বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে কী পরিবর্তন নিয়ে আসেন তা সময়ই ঠিক করে দেবে। সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।