চলতি অর্থবছর (২০২৪-২৫) শেষে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে আসবে মাত্র ৩.৩ শতাংশে, যা পূর্বের ৪ শতাংশ পূর্বাভাস থেকেও কম বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দুর্বল হবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে তারা।
বুধবার প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট: ট্যাক্সিং টাইমস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক সহিংসতা, কারফিউ ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। প্রথম তিন প্রান্তিকে বেসরকারি ও সরকারি বিনিয়োগে প্রবল ধস দেখা গেছে, যার প্রভাব পুরো অর্থবছরে পড়বে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা গত ৩০ বছরে সর্বনিম্ন। এতে স্পষ্ট যে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগপ্রবণতা অত্যন্ত দুর্বল।
সরকারি বিনিয়োগেও ধীরগতি দেখা যাচ্ছে, কারণ মূলধনী ব্যয় হ্রাস পাচ্ছে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হলো, বৈদেশিক খাতে চাপ কিছুটা কমেছে এবং চলতি হিসাব ঘাটতি সংকুচিত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার বলেন, গত এক দশকের একাধিক ধাক্কা দক্ষিণ এশিয়াকে দুর্বল করে দিয়েছে। এখন সময় এসেছে রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার, কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও জলবায়ু সহনশীলতা গড়ে তোলার জন্য টার্গেটেড রিফর্মের।
প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে নামবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। পাকিস্তান ও শ্রীলংকার জন্য এই হার ৩ দশমিক ১ শতাংশ।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে স্পষ্ট হলো, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত না করা গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতি সামনে আরো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।