ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :
ট্রেন স্টেশন থেকে ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে বগিতে উঠে ডাকাতদল। সঙ্গে থাকা গামছা দিয়ে চাকু, খুড়, স্টেপ গিয়ার চাকু ও হোল্ডিং চাকু পেঁচিয়ে রাখা হয়। সুযোগমতো এসব অস্ত্র দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে মুঠোফোন, টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে চলে যান। এই চক্রের চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ময়মনসিংহ নগরীর মুক্তিযোদ্ধা আবাসন বলাশপুরের কোরবান আলীর ছেলে রাশেদ (২২), ভাটিকাশর বড়বাড়ী এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে আকাশ মিয়া (২৫), চর কালিবাড়ি এলাকার মো. রবির ছেলে
মো. ইমন ও জেলার ফুলপুর উপজেলার কটা বাজার এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে মো. হৃদয়।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান রেলওয়ের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন।
তিনি জানান, ডাকাতদল যাত্রীবেশে বগিতে উঠে। ট্রেন চলার কিছুক্ষণের মধ্যে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, টাকা ও মালামাল কেড়ে নিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে যায়। ডাকাতদের ধরতে গত এক সপ্তাহ ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ ও ময়মনসিংহের রেলওয়ে থানা পুলিশ অভিযান চালায়। পরে ওই চারজনকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চাকু, খুড়, স্টেপ গিয়ার চাকু ও হোল্ডিং চাকু উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার চারজন ছাড়াও ইতোপূর্বে আমরা মাসুদুল হক নিশাদ নামের আরও এক ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছি। নিশাদ ডাকাতদের মাস্টারমাইন্ড। তার নেতৃত্বে ডাকাতরা ট্রেনে ডাকাতি করে। সে গত দুই মাস আগে জামিনে মুক্ত হয়েছে। তাকেও আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে। এই চক্রের সবাইকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ থেকে নেত্রকোনার জারিয়াগামী লোকাল ট্রেনগুলো যাত্রীদের কাছে রীতিমতো এক আতঙ্কের নাম। গত ১৮ সেপ্টেম্বর নগরীর কেওয়াটখালী এলাকায় পৌঁছালে ডাকাতের কবলে পড়ে ট্রেনটি। ডাকাত দলের সদস্যরা ট্রেনে উঠে মুখে কাপড় বেঁধে দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে মুঠোফোন, টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এরপর ডাকাত দলের সদস্যরা চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে নেমে পড়েন। এদিন ডাকাতদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহতও হন এক যাত্রী। চলতি মাসের ১ সেপ্টেম্বরও ঘটে একই ঘটনা। এছাড়াও এতে প্রায়ই হচ্ছে ছিনতাই।