ক্রমাগত ধস নামছে খুলনা অঞ্চলের হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানিতে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে মাছ রপ্তানির পরিমাণ কমেছে ৩ হাজার ১২০ টন এতে আয় কমেছে ৬৭৭ কোটি টাকা। নিম্নমুখী রপ্তানির কারণে বিপাকে পড়েছেন রপ্তানিকারকরা। তাদের দাবি চিংড়ি চাষ কম হওয়া ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা ও মূল্য কমে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে এমন পরিস্থিতির।
খুলনা অঞ্চল থেকে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানি হয়েছিল ২৮ হাজার ৩১৬ টন। যা থেকে আয় হয় ২ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। তবে এবার ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রপ্তানির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ১৯৬ টনে। আয় ২ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা। রপ্তানি কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রপ্তানিকারকরা। বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী চিংড়ি না পাওয়ায় ৪১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিয়মিত রপ্তানি করতে পারছে মাত্র ২০ থেকে ২৫টি প্রতিষ্ঠান।
হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারক মফিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, তিন থেকে চারশো মণ মাছের প্রয়োজন হলেও আমরা সামান্য ১০ মণ মাছ আসছে। এতে আমাদের ফ্যাক্টরির যে চাহিদা সেটি মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, হিমায়িত করে বিদেশে রপ্তানি করে আমাদের যে ক্যাপাসিটি সেটি দশ শতাংশের নিচে। অনেক প্রতিষ্ঠান কাঁচামালের সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে।
বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় চিংড়ির ঘের না কমলেও ৫ বছরের ব্যবধানে খুলনায় কমেছে ৪ হাজার ৭৮৬ হেক্টর। লবণ পানি তুলতে বাধা, নদী ভরাট হওয়া, চিংড়ি চাষ ছেড়ে অন্য ফসল চাষ, পুঁজি সংকট ও চিংড়ির মড়কের কারণে লোকসানের জন্য ঘেরের সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
চাষিরা জানান, সম্পূর্ণ বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে চাষাবাদ করায় গলদা চাষিরা বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এদিকে মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, চিংড়ির উৎপাদন বাড়াতে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছেন তারা।
খুলনার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, দক্ষিণ অঞ্চল যদি চিংড়ি চাষ বা চিংড়ি জোন ঘোষণা করে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা সম্ভব হয় তাহলে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
তিন জেলায় গলদা ও বাগদা চিংড়ির ঘের রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমিতে।