চব্বিশের জুলাই, আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরামের ইমিরেটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন৷
বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরামের ইমিরেটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন তার ৮৮তম জন্মদিনের আয়োজনে এসব কথা বলেন৷
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে গণফোরাম এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷
ড. কামাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। কিন্তু বিগত ৫৪ বছরে তা অর্জনে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তবে ২৪- এর ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। দেশের জনগণ স্বপ্ন দেখছে স্বাধীন ও বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের।’
এই গণ-অভ্যুত্থানের পরে ছাত্র-জনতার যে ঐক্য গড়ে উঠেছে তা দেশ গড়ার কাজে লাগাতে পারলে নতুন দিগন্ত তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
কোনো অশুভ শক্তি বা ষড়যন্ত্র যেন এই রক্তস্নাত বিজয় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি৷
ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে তাদের সার্বিক সহযোগিতা যোগানো রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যথাসময়ে যাতে সংস্কার কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যায়, সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে৷ এর মাধ্যমে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম হবে৷’
তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করার কথাও তিনি এ সভায় বলেন৷
সংস্কারের নামে বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা চলছে বলে সভায় মন্তব্য করেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান৷ তিনি বলেন, সংস্কারের নামে এখন কেবল সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে৷ বিরাজনীতিকরণের অপচেষ্টাও হচ্ছে এখন৷ জনআকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের সংস্কার করতে এক, দুই মাস সময়ই যথেষ্ট৷
তিনি বলেন, গত বছরের জুলাই, আগস্টে গণমানুষের যে জাগরণ তৈরি হয়েছে, তার আলোকে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে৷ তবেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানবিক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে পারব৷
বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, দেশে যদি নির্বাচন না হয়, দীর্ঘদিন ধরে যদি একটা অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকে তবে জবাবদিহিতার জায়গা থাকে না৷ আর তাই মানুষের মনে টেকসই গণতন্ত্রের প্রশ্ন উঠেছে৷ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম গঠনে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন৷
পরে তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেন গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা হয়ে আলো ছড়িয়ে যাবেন৷
জয়ন্ত সাহা/এমএ/