৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে হলে দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। তা হলো সব শ্রেণির মানুষের রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক অধিকার। আর এসব অধিকার বাস্তবায়নে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ করছে বিএনপি। ফলে জনগণের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। ৩১ দফা শুধু বিএনপির নয়, এটা সব দলের, সব মতের।’
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে যশোর শহরের একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত বিএনপির ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’বিষয়ক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। যশোর, নড়াইল ও ঝিনাইদহ জেলায় পৃথকভাবে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার দ্বিতীয়ার্ধে তিন জেলার নেতাদের উদ্দেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নেতারা তারেক রহমানের কাছে নানা প্রশ্ন করেন। তারেক রহমান নেতাদের নাম উল্লেখ করে এসব প্রশ্নের উত্তর দেন। তারেক রহমান বলেন, ‘সমাজে ভালো-খারাপ দুই ধরনের মানুষ আছে। যে খারাপ মানুষ তার সঙ্গে আমরা সম্পর্ক রাখতে চাই না। মানুষ বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে চাচ্ছে। এই আস্থা নষ্ট করার জন্য কেউ যদি কাজ করেন, তাকে দলে রাখা সম্ভব হবে না।’
যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জাবিউল্লাহ, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবীবা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু চৌধুরী, যশোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু প্রমুখ। কর্মশালায় যশোর জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৮ শতাধিক নেতা অংশ নেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘জনগণ যদি আপনার পাশে না থাকে, তাহলে আপনি কিসের নেতা? কিসের রাজনৈতিক কর্মী? একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আপনার সার্থকতা কী? ১০টা মানুষ আপনাকে সালাম দেন কেন? তাদের জন্য আপনি কাজ করেন, বিপদে-আপদে পাশে থাকেন। কিন্তু আপনি যদি এমন কিছু করেন, যেটা তার মনে কষ্ট দেয়, তখন তিনি আপনার পেছনে থাকবেন না। এখন মানুষ অনেক সচেতন। মানুষ আমাদের ওপর, বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে চাইছে। এই আস্থা নষ্ট করার জন্য যদি কেউ এমন কোনো কাজ করেন, যাতে আস্থা নষ্ট হবে, তাহলে আমার পক্ষে, আমাদের পক্ষে তাকে রাখা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে দলকে স্বার্থপর হতে হবে। বহু ঝড়ঝঞ্ঝা, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্য দিয়ে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। কাজেই আমাদের নিজের স্বার্থের চেয়ে দলের স্বার্থ বেশি দেখতে হবে। আমরা যখন খারাপ কিছু জানছি, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। সমাজে যে খারাপ, যে অন্যায় করে, তার সঙ্গে আমরা সম্পর্ক রাখতে চাই না।’
৩১ দফা কর্মসূচিকে মানুষের কাছে নিতে হবে মন্তব্য করে তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের জন্য, দেশের জন্য ভালো কী করেছি, ভালো কী করতে চাই, সে কথাগুলো মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া। সামনে একটা নির্বাচন। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ৩১ দফা কর্মসূচি মানুষের কানে কানে পৌঁছে দিতে হবে। জনগণের কাছে যেতে হবে। এ দেশের মালিক জনগণ। দিন শেষে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা জনপ্রিয় কি জনপ্রিয় না। কাজেই জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন।’